গাথানুবাদকের মন্থন
এই তাৎপর্যমন্ডিত এবং জটিল ধাঁচের কবিতাটি
নিদ্দেস (খুদ্দক নিকায়ের অন্তর্গত
সুত্ত নিপাতের অট্ঠকবগ্গো-এর অর্থকথা)-এর
শুষ্ক ভাষার অর্থকথাতে শাশ্মনিক শূন্যতায় মধ্যে নিবদ্ধ
যা সারিপুত্রকে উদ্দেশ্য করে নিবেদিত।
নিদ্দেস দুভাগে বিভক্ত মহানিদ্দেস এবং চুল্লনিদ্দেস।
এটি মহানিদ্দেস থেকে চয়নকৃত।
গতানুগতিক কবিতা এবং এই কবিতার মধ্যে পার্থক্য হলঃ
এটি হাজার বছরেরও অধিক কালের বাংলা সাহিত্যের
প্রাচীন যুগের গূঢ়কাব্য নয়,
মধ্য যুগের ধর্মকাব্য নয়,
আধুনিক যুগের মানবকাব্য নয়,
উত্তরাধুনিক যুগের বস্তুকাব্য নয়,
নয় কোন ব্যক্তি-স্বার্থ চরিতার্থের,
নয় কোন রাজনৈতিক মতের,
নয় কোন অর্থনৈতিক লাভের,
নয় কোন বিদ্রোহের,
নয় কোন বিপ্লবের,
নয় কোন কালবন্দীর,
এটি কল্পনার রঙে রঞ্জনবিহীন,
এটি চমৎকার গল্পের বিমূর্ততাহীন,
এতে গীতিকাব্যের ঢং নেই,
এতে মহাকাব্যের সর্গ নেই,
এই কবিতা পারস্যের নয়,
এই কবিতা বাংলার নয়,
এই কবিতা চাকমার নয়,
এই কবিতা বড়ুয়ার নয়,
এই কবিতা কবির নয়,
এই কবিতা গাথানুবাদের নয়,
এই কবিতা প্রেয়সীতে অনিবেদিত,
এই কবিতা প্রিয়তে অবন্দিত,
এ গেরুয়াকাব্য-
বিমুক্তি রসের গ্রন্থন।
এ এল ক্ষণ-
করি মন্থন, অনুনির্বাণ দর্শন।
সূচগ্র্যে সষর্প
“জীবিত এবং আত্মভাব, সুখ এবং দুঃখ কেবল
এক চিত্ত সংযুক্ত, সত্বর ক্ষণে বর্তায়।”
“চুরাশি সহস্র, কল্পস্থায়ী যে মরুৎ
তদ্ব্যতীত যারা জীবিত, দ্বি চিত্ত দ্বারা সংযুক্ত।”
“যে দেহান্তে নিরুদ্ধ, বা এখানে দন্ডায়মান
সকলেই স্কন্ধ সদৃশ, গত অসংস্কারিক।”
“অনন্তর যা ভগ্ন, যা অনাগতেও ভগ্ন
তদন্তরে নিরুদ্ধ হয়, সবই অভিন্ন লক্ষণযুক্ত।”
“পুনজন্ম মুক্ত জন্ম নেই, প্রত্যুৎপন্নেই জীবিত
চিত্তভগ্ন মৃত লোকে, প্রজ্ঞপ্তি পরমার্থত।”
“যথারূপ অধঃপ্রবর্তন, ছন্দেরই পরিণাম
অচ্ছিন্নধারায় বর্তায়মান, ষড়ায়তন প্রত্যয়ে।”
“অনিদান গত ভগ্ন, অনাগত পূণ্যহীন
যা নিবর্ত স্থায়ী, তা সূচগ্র্যে সষর্প সদৃশ।”
“ধর্মের নিবর্তশূন্য, ভগ্ন সেই পূজিত,
ভগ্নধর্ম স্থায়ী, পুরাণে অমিশ্র।”
“অদর্শন আকৃষ্ট করে, দর্শনে ভঙ্গের প্রস্থান
আকাশে বিজলী উৎপন্নের ন্যায়, উদয়-বিলয়মান।”
জুয়েল বড়ুয়া
ছাত্র, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
No comments:
Post a Comment